মুখের লালায় দাঁতের ক্ষয়রোধ
মানবদেহের সবচেয়ে শক্তিশালী অংশ কোনটি? উত্তর হলো, দাঁতের এনামেল বা আবরণ। তথ্যটা পড়েই দাঁত দিয়ে কোমল পানীয়র বোতলের ক্যাপ খুলতে যাবেন না! সবুর করুন, দাঁত দিয়ে বাহাদুরি ফলানোর আগে জেনে নিন, এত শক্ত একটা অংশও কী করে সবচেয়ে ‘শক্ত ব্যথার’ কারণ হতে পারে। ওই যে পুরোনো আপ্তবাক্যটাই আবার আওড়াতে হয়, ‘দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা দাও’। আর যদি মর্যাদা না দেন, তাহলে? দাঁতের ব্যথা যার হয়েছে, তাকেই জিজ্ঞেস করুন।
দাঁতের সবচেয়ে বড় সমস্যা কোনটি? এক কথায় ক্ষয় বা গর্ত হয়ে যাওয়া। ইংরেজিতে যেটাকে বলে ক্যাভিটি (Cavity)। এর থেকে রেহাই পাবেন কিসে, জানেন? উত্তরটা আপনার মুখেই আছে—লালা! শুনতে একটু বিতিকিচ্ছি হলেও এটাই সত্যি। মুখে ঠিকঠাকভাবে লালা নিঃসরিত হলেই দাঁত ঠিক থাকবে আপনার। লালায় থাকে খনিজ উপাদান, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস। যেগুলো দাঁতের আবরণের জন্য খুব দরকারি। ব্যাকটেরিয়া ও চিনির কারণে মুখে উৎপন্ন অ্যাসিডও নিষ্ক্রিয় করে দেয় এই লালা। তবে মুখের এই উপাদানটার নিঃসরণ কমে যায় কিছু অনিয়মের কারণে। অনিয়মের মধ্যে প্রধানতম হলো মুখ শুষ্ক হয়ে যাওয়া। মুখের ভেতরটা শুষ্ক হয় রোদের নিচে অধিক পরিশ্রমে, বিশেষ কিছু ওষুধ সেবনের ফলে, বমি হলে এবং পাকস্থলীর সমস্যা থাকলে। তাহলে মুখে লালার পর্যাপ্ত নিঃসরণের জন্য কী করবেন?
যা করবেন
১. নিয়মিত পানি খান। বেশিক্ষণ পানি না খেয়ে থাকলে মুখ শুষ্ক হয়ে পড়ে। পানি খেলে মুখের ভেতরটা সজীব থাকবে, লালাও নিঃসরিত হবে পর্যাপ্ত পরিমাণে।
২. অনেকক্ষণ চিবোনো যায়, এমন খাবার খেতে পারেন। এর মধ্যে চিনিমুক্ত চুইংগাম, শক্ত পনির এবং কাঁচা গাজর সবচেয়ে ভালো।
৩. চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন। অনেক সময় ওপরের নিয়মগুলো মানার পরও লালা নিঃসরণে ঝামেলা থাকতে পারে। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা বিশেষ কিছু ওষুধ অথবা জেল দেন। এ ছাড়া ভালো মানের টুথপেস্ট ব্যবহার করুন। ভালো টুথপেস্ট মুখের আর্দ্রতা বজায় রাখে।
যা করবেন না
১. ধূমপান ও অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকুন। এ ছাড়া ক্যাফেইন-সমৃদ্ধ পানীয় যেমন কফিও মুখ শুষ্ক করে দেয়। অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবারও আছে এই তালিকায়।
২. মুখ দিয়ে শ্বাস নেবেন না। এটা অবশ্য আমরা বেশির ভাগ সময় ঘুমের মধ্যেই করি। মুখ হাঁ করে ঘুমালে এটা হয়। এর ফলে শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রক্রিয়া মুখ দিয়েও ঘটে। এ অভ্যাস দূর করার চেষ্টা করুন।
No comments:
Post a Comment