Saturday, October 22, 2016

আগ্রহের কেন্দ্রে জয়, সোহেল আর সাধারণ সম্পাদক পদ

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় কাউন্সিলের প্রথম দিনের অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে। কাল রোববার সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বসবে কাউন্সিল অধিবেশন। এই অধিবেশন ঘিরেই সব আগ্রহ আওয়ামী লীগের নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের। এখানেই নির্ধারণ হবে দলের আগামী দিনের নেতৃত্বে কারা আসছেন।


আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, প্রথম দিনে দলের কাউন্সিলরদের মনোভাব দেখে মনে হচ্ছে, আজকের অধিবেশনের পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক নিয়ে আলোচনা বেশি হবে। এ ছাড়া শেখ হাসিনার ছেলে ও তাঁর তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে তানজীম আহমেদ সোহেল তাজকে নিয়েও আগ্রহ রয়েছে কাউন্সিলরদের। এ দুজনই এবারের কাউন্সিলে কাউন্সিলর হিসেবে যোগ দিয়েছেন।
দলের সভাপতি পদে আবারও থাকছেন বর্তমান সভাপতি শেখ হাসিনা। তাই নতুন কমিটির সব আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হবে সাধারণ সম্পাদক পদ ঘিরে। এই পদে কে আসছেন, নাকি বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আবারও ওই পদে থাকবেন, তা দেখতে অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় থাকবেন কাউন্সিলররা। আওয়ামী লীগের সম্মেলন আয়োজকদের একজন প্রথম আলোকে বলেন, কর্মসূচি অনুযায়ী সন্ধ্যা নাগাদ সব প্রশ্নের উত্তর মিলবে, সব প্রতীক্ষা শেষ হবে। তিনি আরও বলেন, এবারের কাউন্সিলে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন পদে নেতাদের নাম ঘোষণা করা হতে পারে। তাঁর মতে, কমিটির বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদে তরুণ নেতাদের দেখা যাবে। কেন্দ্রীয় কমিটিতে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কেও দেখা যেতে পারে।
প্রথম অধিবেশনে বিভিন্ন জেলার নেতারা কেন্দ্রীয় কমিটিতে জয়কে অন্তর্ভুক্তির দাবি করেছেন। সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামও জয়কে আগামী দিনে দলের নেতৃত্ব দেওয়ার কথা বলেন।
আজকের সমাপনী বক্তব্যে শেখ হাসিনা ভাষণে বলেন, সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে নেতা নির্বাচিত হবেন। একজন কাউন্সিলর সভাপতির নাম প্রস্তাব করবেন, আরেকজন তা সমর্থন দেবেন। একইভাবে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হবে।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ ৮৩টি। নতুন ৮ পদসহ কমিটিতে ১১টি পদ খালি আছে। তা ছাড়া বিগত কমিটির কয়েকজন নেতা কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ পড়তে পারেন।
উৎসব-আমেজে কাউন্সিলে আসা নেতা-কর্মীরা: আজ সকাল থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় ছোট ছোট মিছিল নিয়ে এসে জড়ো হন নেতা-কর্মীরা। তাঁদের মধ্যে আছে যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সদস্যরা। মুহুর্মুহু স্লোগানে গোটা এলাকা মুখর করে রাখেন তাঁরা। সরকার আর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সাফল্য তুলে ধরা হচ্ছে এসব স্লোগানে। সেই সঙ্গে সরকারের নানা উন্নয়নচিত্র নিয়ে ছোট ছোট ফেস্টুনও বহন করেন তাঁরা।
জাতীয় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশাপাশি সাজানো হয়েছে পুরো রাজধানীকে। ঢাকার প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ সড়কে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে তৈরি করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু আর শেখ হাসিনার ছবি-সংবলিত তোরণ। প্রধান সড়কগুলোর দুই পাশে বিভিন্ন রঙের পতাকা দিয়ে সাজানো হয়েছে। মঞ্চ ও আশপাশের ২৮টি এলইডি পর্দায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সরাসরি দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়।
ক্ষমতাসীন দলের এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের এলাকায় শনি ও রোববার যানবাহন চলাচলেও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়। তবে সন্ধ্যার পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও এর আশপাশের এলাকায় যান চলাচলের নিয়ন্ত্রণ তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে নিরাপত্তার জন্য রোববার পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমোদিত ব্যক্তি ছাড়া সর্বসাধারণের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। বেশ কিছু সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। তা ছাড়া যানবাহন কম থাকায় কিছুটা ভোগান্তিতে পড়তে হয় নগরবাসীকে।
এবারের সম্মেলনে ৬ হাজার ৫৭০ জন কাউন্সিলর অংশ নেন। ছিলেন সমানসংখ্যক ডেলিগেটও। ভারত, চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়াসহ ১১টি দেশের বিভিন্ন দলের প্রায় ৫৫ জন রাজনীতিবিদ বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দলটির সম্মেলনে অতিথি হিসেবে যোগ দেন। সম্মেলনে আসেন দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও। এ সম্মেলন উপলক্ষে নেওয়া হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা।
সর্বশেষ আওয়ামী লীগের ১৯তম জাতীয় সম্মেলন হয়েছিল ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।

No comments:

Post a Comment

Pages

 

Sample text

Sample Text

 
Blogger Templates