Friday, October 21, 2016

পাকিস্তানকে কীভাবে বাগে আনা যায়

বিশেষ করে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের উরির সেনাছাউনিতে সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানকে কড়া জবাব দেওয়ার জন্য চাপে পড়ে নরেন্দ্র মোদির সরকার। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারত কী কী পদক্ষেপ নিতে পারে, তা নিয়ে নানা আলোচনা আছে।


গত ১৮ সেপ্টেম্বর উরির সেনাছাউনিতে সন্ত্রাসী হামলায় ১৯ জন ভারতীয় সেনাসদস্য নিহত হন। হামলার জন্য পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিদের দায়ী করে ভারত।
উরি হামলার জবাবে গত ২৯ সেপ্টেম্বর পাকিস্তান ভূখণ্ডের মধ্যে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ চালায় ভারত। এই অভিযানের পরও ভারতে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী হামলা হয়। সীমান্তে দুই দেশের মধ্যে চলে গুলিবিনিময়।
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হয় চরম উত্তেজনা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে শুরু করে দেশটির ক্ষমতাসীন দল বিজেপির মন্ত্রী, এমপি ও নেতাদের কাছ থেকে আসে হুংকার। তাঁরা পাকিস্তানকে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়ার হুমকি দেন।
ভারতীয় বিশ্লেষকেরা বলছেন, পাকিস্তানকে শায়েস্তা করার জন্য ভারতের সামনে নানা বিকল্প আছে। এর মধ্যে সামরিক, কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও কৌশলগত পদক্ষেপ অন্যতম।
কাশ্মীরে দায়িত্ব পালন করা অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা লে. জেনারেল সৈয়দ আতা হাসনাইনের মতে, ভর্ৎসনা-ধিক্কার আর কাজে আসছে না। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের দিক থেকে কূটনৈতিক ও সামরিক উভয় ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। পদক্ষেপ নিতে হবে সতর্কতার সঙ্গে, পাকিস্তানের ফাঁদে পা দিয়ে নয়।
উরি হামলার প্রত্যুত্তরে পাকিস্তানের ভেতরে ভারতের চালানো সার্জিক্যাল স্ট্রাইককে ‘সফলতা’ হিসেবে দেখছে নয়াদিল্লি। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, এই অভিযানে পাকিস্তান পুরোপুরি তাজ্জব হয়ে গেছে। পাকিস্তান এই অভিযানের কথা নাকচ করেছে।
দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধংদেহী ভাবে অনেকের আশঙ্কা, এই বুঝি যুদ্ধ বেধে গেল। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে ক্ষতি ছাড়া কোনো ইতিবাচক সমাধান আসবে বলে মনে করেন না অনেক বিশ্লেষক। পাকিস্তানও যে পরমাণু শক্তিধর দেশ, সে কথা ভারতকে বিবেচনায় রাখতে হবে।
সাম্প্রতিক উত্তেজনার মধ্যে আকারে-ইঙ্গিতে ভারতকে হুঁশিয়ার করে পাকিস্তান। দেশটির পক্ষ থেকে বলা হয়, পারমাণবিক অস্ত্র সাজিয়ে রাখার জন্য নয়; প্রয়োজনে তা ব্যবহার করবে ইসলামাবাদ।
পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিদের দমনে ভারতের প্রকাশ্য বা গোপন সামরিক পদক্ষেপের পক্ষে কোনো কোনো ভারতীয় বিশ্লেষক। কেউ কেউ ইসলামাবাদের মতো পাল্টা কৌশল নেওয়ারও পক্ষে। তা ছাড়া প্রতিরক্ষাব্যবস্থা, নজরদারি কার্যক্রম ও গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদারের মাধ্যমে ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সুসংহত করার পরামর্শ রয়েছে।

সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে কূটনৈতিকভাবে পাকিস্তানকে চাপে ফেলতে ভারত ভালোই পারদর্শিতা দেখিয়েছে। ইসলামাবাদকে অনেকটা একঘরে করে ফেলেছে নয়াদিল্লি। এই কূটনৈতিক চাপ আরও বাড়াতে চায় ভারত। কূটনৈতিক ধাক্কাটা ইসলামাবাদের হাড়ে গিয়ে লেগেছে। সন্ত্রাসের কারণে পাকিস্তানের আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার বিষয়ে দেশটির প্রভাবশালী সেনাবাহিনীকে বেসামরিক সরকার সতর্ক করে দিয়েছে বলে খবর বেরিয়েছে।
পাকিস্তানকে কোণঠাসা করতে দেশটির বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক পদক্ষেপের বিষয়টি নয়াদিল্লির সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে বলে জানা যায়।
সিন্ধু চুক্তি রদ করে পাকিস্তানকে পানিতে মারার কৌশল গ্রহণের জন্য মোদি সরকারের কাছে অনেকে দাবি তুলেছেন। তবে এই কৌশলের ব্যাপারে ভারতের নিরাপত্তা ও পানি বিশেষজ্ঞদের আপত্তি রয়েছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে ভারতকে চীনের কথাও মাথায় রাখতে হবে। দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থের বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হবে। ইন্ডিয়া টুডে অবলম্বনে

No comments:

Post a Comment

Pages

 

Sample text

Sample Text

 
Blogger Templates